আপনি আপনার প্রতিবেশীকে কষ্ট দিচ্ছেন না তো! যদি কষ্ট দিয়ে থাকেন তাহলে জেনে নিন প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়ার কি ভয়ংকর পরিণতি হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে।
somadanmedia.com |
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন কেয়ামতের দিন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দুইজন প্রতিবেশীকে মীমাংসার জন্য দাঁড় করানো হবে। (মুসনাদে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ৪/১৫১)
অপর এক হাদিসের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিবেশীকে নির্যাতন করলো সে যেন আমাকে নির্যাতন করলো, যে ব্যক্তি আমাকে কষ্ট দিল সে যেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে কষ্ট দিল। এবং যে ব্যক্তি প্রতিবেশীর সাথে দুশমনি করল সে যেন আমার সাথে দুশমনি করল আর যে আমার সাথে দুশমনি করলো সে যেন আল্লাহ তায়ালার সাথে দুশমনি করল। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব পৃষ্ঠা ৫৩৮, নং ৩৮৮৫)
অপর এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কোন ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল জৈনক মহিলা নামাজ রোজা, দান সদকা প্রচুর পরিমাণে করে কিন্তু নিজের যবান দ্বারা প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এই মহিলা জাহান্নামে যাবে। (বুখারীর আদাবুল মুফরাদ, ইমাম বুখারী ১১৯)
অপর এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে হযরত জিব্রাইল আমিন আলাইহি সালাতু ওয়াস সালাম আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ দিয়েছেন যে আমার মনে হচ্ছিল যে প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন। (বুখারী শরীফ হাদিস নং৬০১৪-৬০১৫,)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তিনি বললেন, যাও ধৈর্য ধরাণ করো।অতঃপর সে দু’ বা তিনবার এভাবে এসে অভিযোগ করলে তিনি বললেন, তুমি গিয়ে তোমার জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে রাখো। অতঃপর সে তার জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে রাখলে লোকেরা তাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করতে লাগলো এবং সে তাদেরকে তার প্রতিবেশীর খবর জানাতে থাকলো। লোকেরা তাকে অভিশাপ দিতে লাগলো, আল্লাহ তোমার প্রতি এরূপ এরূপ করুন। তার প্রতিবেশী তার নিকট এসে তাকে বললো, তুমি ফিরে যাও। ভবিষ্যতে তুমি আমার পক্ষ থেকে এরূপ কিছুর পুনরাবৃত্তি দেখবে না।( সুনানে আবু দাউদ ২/৭০১,নং ৫১৫১-৫১৫২,)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে তার উচিৎ তার মেহমানকে সম্মান করা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে তার উচিৎ প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়া। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে। (বুখারী, মুসলিম।)
পরিশেষে
প্রতিবেশীর হকের ক্ষেত্রে আরো অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। অতএব আল্লাহতালার কাছে এই প্রত্যাশা তিনি যেন আমাদেরকে প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট না দেওয়া এবং তাদের হক আদায় করার ব্যাপারে এবং সফল গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার উপকরণ যোগিয়ে দেন।