ছোট ফুটফুটে ছেলে বা মেয়ে সন্তানের কপালে আমাদের অনেকেই টিপ দিয়ে থাকে। তারা মনে করে এই টিপ দিলে সন্তান কুদৃষ্টি এবং বদনযর থেকে বেঁচে থাকবে। বিশেষ করে যখন বাচ্চা কে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় তখন এই দৃশ্য বেশি দেখা যায়। এই টিপ দেওয়ার ইসলামী হুকুম কি তা অনেকের জানা নেই। আদৌ কি ইসলাম এটাকে সমর্থন করে কি না। চলুন আমরা এই টিপ দেয়ার হুকুম জেনে নেই..
অনেকে বদনজর কিংবা কুদৃষ্টি থেকে হেফাযতের উদ্দেশ্যে শিশুর কপালে টিপ দেওয়া ঠিক নয়। এটি বদনজর রোধ করে না। কেননা কুদৃষ্টি বা বদনযর থেকে হেফাজত করার মালিক আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। তাই কুদৃষ্টি থেকে মুক্তি পেতে আমাদের আল্লাহ তায়ার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। যদি কেউ এই ধারণা পোষণ করে যে কপালে কালো টিপ শিশুকে বিভিন্ন বিপদ আপদ থেকে হেফাজত করতে পারে তা হলে এটা শিরিকের পর্যায়ে চলে যাবে।
শিশুদের বদনজর থেকে হেফাজতের দোয়া
শিশুকে বদনজর এবং কুদৃষ্টি ও বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করার জন্য কী করতে হবে-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শিখিয়েছেন।
এক, হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান ও হুসাইন (রা)-এর জন্য এই দুআ পড়ে আল্লাহর আশ্রয় চাইতেন-
أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلَّ عَيْنٍ لَامَّةٍ.
উচ্চারণ: উয়ীযুকুমা বিকালিতিল্লাহিত তা-ম্মা। মিন কুল্লি শায়তানিন ওয়া হাম্মা। ওয়া মিন কুল্লি আয়নিন লাম্মা।
অর্থ: সকল শয়তান, কীটপতঙ্গ ও বদনজর হতে তোমাদেরকে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমাসমূহের আশ্রয়ে দিচ্ছি।
দুআটি এক সন্তানের জন্য পড়লে 'উয়ীযুকা' أُعِيْذُكَ, দুইজনের জন্য 'উয়ীযুকুমা' أَعِيُذْكُمًا, আর দুইয়ের অধিক হলে 'উয়ীযুকুম' أُعِيْذُكُمْ , বলতে হবে।
দুই ,আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে।
তিন, সূরা ইখলাস
চার, সূরা ফালাক
পাঁচ, সূরা নাস পাঠ করে হাতে ফু দিয়ে শিশুর সারা শরীরে তিন বার হাত বুলিয়ে দিবে।
উপসংহার
হে প্রিয় বোন আমার আসুন আমরা কুপ্রথা আর অপসংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দেওয়া জীবন বিধান ইসলামের নিয়ম কানুন মেনে চলি। নিজ সন্তানকে হেফাজতের জন্য কপালে কালো টিপ নয় বরং আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার তাওফিক দান করুক।