কিয়ামতের দিন এমন ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে, সে দিন প্রত্যেক মানুষ সুপারিশ কারী অন্বেষণ করবে। কিন্তু কেউ কারো জন্য সুপারিশ কারী হবে না। সকলে ইয়া নাফিস ইয়া নাফিস বলবে। ঐ দিন কুরআন শরীফ ঐ ব্যক্তির জন্য সুপারিশ কারী হবে যে ব্যক্তি নিয়মিত কুরআন শরীফ পাঠ করতো।
হযরত সায়ীদ ইবনে সুলাইম (রহঃ) হইতে বর্ণিত, হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে কুরআনের চেয়ে বড় আর কোন সুপরিশকারী হইবে না। না কোন নবী; না কোন ফেরেশতা আর না অন্য কেহ। (শরহুল-এহইয়া)
কুরআন পাকের সুপারিশকারী হওয়া এবং এমন পর্যায়ের সুপারিশকারী হওয়া যার সুপারিশ গ্রহণযোগ্য হইবে। এই বিষয় আরও বহু রেওয়ায়াত দ্বারা জানা গেছে। আল্লাহ তায়ালা আপন রহমতে আমার জন্য এবং তোমাদের জন্য কুরআন শরীফকে সুপারিশকারী বানিয়ে দিন। আমাদের প্রতিপক্ষ ও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী না বানান।
কুরআন শরীফ তার পাঠ কারী কে জান্নাতে নিয়ে ছাড়বে
'লাআলী মাসনূআ' নামক কিতাবে 'বায্যারে'র বর্ণনা হইতে নকল করেছেন এবং এই হাদীসকে মওজু' বা জাল বলিয়া আখ্যায়িতও করেন নাই। আর তাহা এই যে, মানুষ যখন মৃত্যুবরণ করে তখন তাহার পরিবারের লোকেরা কাফন-দাফনের কাজে মশগুল হইয়া যায়। এমতাবস্থায় তাহার শিয়রে অত্যন্ত সুন্দর ও সুদর্শন এক ব্যক্তি আসিয়া হাজির হয়। কাফন পরার পর সেই লোকটি কাফন এবং তাহার বুকের মধ্যভাগে থাকে। দাফন করার পর লোকেরা যখন ফিরিয়া আসে এবং মুনকার নাকীর দুই ফেরেশতা আসিয়া কবরে উপস্থিত হয় তখন তাহারা মুর্দাকে নির্জনে প্রশ্ন করার জন্য ঐ লোকটিকে আলাদা করিতে চায়।
কিন্তু সেই লোকটি বলিতে থাকে ইনি আমার সাথী, আমার বন্ধু। আমি কোন অবস্থাতেই তাহাকে একাকী ছাড়িয়া যাইতে পারি না। তোমরা যদি তাহাকে প্রশ্ন করিবার জন্য আদিষ্ট হইয়া থাক তবে তোমরা নিজেদের কাজ করিয়া যাও। আমি ততক্ষণ তাহার নিকট হইতে যাইতে পারিব না যতক্ষণ না তাহাকে জান্নাতে প্রবেশ করাইব। অতঃপর সে তাহার সাথীর প্রতি লক্ষ্য করিয়া বলে, আমি ঐ কুরআন যাহাকে তুমি কখনও বড় আওয়াজে আবার কখনও আস্তে আস্তে পড়িতে। তুমি নিশ্চিন্ত থাক। মুনকার নাকীরের প্রশ্নের পর তোমার আর কোন চিন্তা নাই।
অতঃপর যখন তাহারা প্রশ্নাবলী হইতে অবসর হইয়া যায়। তখন এই ব্যক্তি তাহার জন্য বেহেশত হইতে বিছানাপত্রের ব্যবস্থা করে। যাহা রেশমের তৈরী হইবে এবং মিশকের দ্বারা সুঘ্রাণযুক্ত হইবে।' আল্লাহ তায়ালা স্বীয় অনুগ্রহে আমাকেও এবং তোমাদেরকেও উহা নসীব করুন। ইহা খুবই ফযীলতপূর্ণ হাদীস।
উপসংহার
প্রিয় ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাই এবং শ্রদ্ধেয়া বোন আমার চলুন আমরা দুঃখে-সুখে, সচ্ছল অসচ্ছল সর্বাবস্থায় কুরআন পাঠ কারী হয়ে যায়। যারা এখনো কুরআন শরীফ পড়তে পারি না। অতিসত্বর কুরআন শরীফ পড়া শিখা শুরু করি। এবং কুরআন শরীফ কে আমাদের পক্ষে সুপারিশ কারী বানায়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে এই প্রত্যাশাই করি। তিনি যেন কুরআন কে আমাদের পক্ষে সুপারিশ কারী বানান।