সমাধান মিডিয়া ডেস্ক: ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন ২০২৩ (খসড়া)’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সংগঠনটির আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
![]() |
somadanmedia.com |
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন ২০২৩ (খসড়া)’ আমাদের নজরে এসেছে। এ আইনটিকে যদিও হিজড়া সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা আইন মনে করা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আসলে হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার এক নয়। শুধু মনে করার কারণে কারও লিঙ্গ পরিবর্তন হতে পারে না। এমনকি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমেও লিঙ্গ পরিবর্তন হয় না। এভাবে না কোনো পুরুষ নারী হয়ে যায়, আর না কোনো নারী পুরুষ হয়ে যায়।’
হিজড়া এবং ট্র্যান্সজেন্ডার মতবাদের মৌলিক পার্থক্য
১. হিজড়া জন্মগত ত্রুটি। ল্যাবটেস্ট করে জেনেথিক সমস্যার বিষয়টি প্রমাণ করা যায়।
২. ট্রান্সজেন্ডার এটি মানসিক অবস্থা। যার সাথে জন্মগত লিঙ্গের কোনো সম্পর্ক নেই। ল্যাবটেস্ট করে প্রমাণ করা যায় না। স্বঘোষিত পরিচয় (self-identified) ধারণ করে। একটি ছেলে বা মেয়ে নিজেকে 'ভুল দেহে' আটকা পড়েছে মনে করে।
৩. হিজড়া হওয়া খুবই অস্বাভাবিক ও বিরল ঘটনা। প্রতি ৫ হাজার জনে একজন হিজড়া হতে পারে।
৪. হিজড়া হওয়া একটি শিশু অস্পষ্ট বাহ্যিক প্রজনন অংগ নিয়ে জন্মাতে পারে। কারোর ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি, এমনকি ২০/২৫ বছর বয়সেও শারীরিক পরিবর্তন হতে পারে।
৫. ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার ক্ষেত্রে হরমোন বা সার্জারি করে ট্রান্সজেন্ডার হলো কী না, তা মুখ্য নয়। বরং এই আইডেন্টিটি প্রকাশিত হতে পারে নাম পরিবর্তন করে। যেমন পুরুষ থেকে নারীর নাম ধারণ করে। কিংবা নারী থেকে পুরুষ নাম ধারণ করে। পোশাক পরিবর্তন, মেকআপ করা, নেইল পলিস, চুল মেয়েদের মতো লম্বা করে রাখে।
৬. হিজড়াদের কেউ কেউ অবিকল মেয়ে হয়ে বড় হতে থাকে। কিন্তু বড় হওয়ার পর এমনকি বয়স পেরিয়ে যাওয়ার পরও যখন দেখা যায় তার ঋতুস্রাব হচ্ছে না, তখন বোঝা যায় আসলে সে লিঙ্গ প্রতিবন্ধী হিজড়া।
৭. সার্জারি করে ট্রান্সজেন্ডার হয়ে জড়ায়ু বানানো যায় না। আবার কার্যকরি পুরুষাঙ্গও তৈরি করা যায় না, যার দ্বারা প্রজনন ক্ষমতা তৈরি হয়।
৮. হিজড়ারা জন্মগতভাবেই সন্তান জন্ম দিতে পারে না। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডাররা সার্জারির আগে সন্তান জন্মদানের আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা রাখে।
৯. গবেষণায় দেখা গেছে ২০% ট্রান্সজেন্ডার মেডিকেল ট্রিটমেন্ট করে বাহ্যিক নারী বা পুরুষের মতো কিছু বৈশিষ্ট্য অর্জন করলেও বাস্তবে ১৮% ট্রান্স নারীর পুরুষাঙ্গ থাকে। তেমনিভাবে ট্রান্স পুরুষের যোনি থাকে।
১০. ট্রান্সজেন্ডাররা মূলত সমকামি হয়ে থাকে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ আইনের ফলে সমকামিতা ও ব্যভিচারের মতো ঘৃণ্য ও মহাপাপগুলো আইনি বৈধতা পাবে। ফলে একদিকে যেমন ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে। তেমনি আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি ও শরীয়তের মধ্যে বিকৃতি ও পরিবর্তনের মতো গুনাহে লিপ্ত হওয়ার দরুন তারা আল্লাহর গজব ও লানতেরও শিকার হবে। কোনো মুসলিম দেশ না বুঝে এমন আইন পাশ করে ফেললেও বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর দ্রুতই তারা তা বাতিল করে ফেলেছে। তাই আমরা এই আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার প্রধানের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি ’